আজকের দ্রুতগতির যুগে, প্রযুক্তির অগ্রগতি এবং ইন্টারনেটের সর্বব্যাপী উপস্থিতি আমাদের জ্ঞানার্জনের ধরনকে ব্যাপকভাবে পরিবর্তন করেছে। বর্তমান প্রজন্মের কাছে কোনো তথ্য জানার জন্য কেবল কয়েকটি ক্লিকই যথেষ্ট। তবু কিছু বিষয় আছে যা ইন্টারনেট বা প্রযুক্তি থেকে জানা সম্ভব নয়। সেসবের মধ্যে অন্যতম হলো- জীবনবোধ এবং অভিজ্ঞতার শিক্ষা, যা শুধুমাত্র প্রবীণদের সান্নিধ্যে বসে জানা যায়।
প্রবীণদের জীবন অভিজ্ঞতা একটি অমূল্য সম্পদ। তাঁদের জীবনের প্রতিটি ধাপে সংগ্রহ করা জ্ঞান, শিক্ষা, এবং মূল্যবোধের মিশ্রণ কেবল বই বা ইন্টারনেটে পাওয়া যায় না। এককালে, তরুণরা তাঁদের বড়দের পাশে বসে জ্ঞান আহরণ করতো, যা ছিলো তাদের নৈতিক ও মানসিক বিকাশের অপরিহার্য বিষয়।
আজকের প্রজন্মের অনেকে এই পদ্ধতি থেকে সরে এসেছে। প্রযুক্তির মাধ্যমে তারা বিশ্বের সঙ্গে সংযুক্ত থাকলেও, জীবনের প্রকৃত জ্ঞানার্জন অনেক ক্ষেত্রে তাদের অধরা থেকে যাচ্ছে। কেউ যখন প্রবীণদের সঙ্গে সময় কাটায়, তখন তারা শুধু তথ্যগত জ্ঞানই পায় না; বরং জীবনের বহু গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা যেমন ধৈর্য, সহমর্মিতা, এবং ব্যক্তিগত সম্পর্কের গুরুত্ব সম্পর্কে জানতে পারে। এই ধরনের শিক্ষা কখনোই শুধুমাত্র তত্ত্বের মাধ্যমে শেখা সম্ভব নয়।
প্রবীণদের অভিজ্ঞতা এবং জীবনদর্শন আমাদের জীবনের কঠিন সময়গুলোতে দিকনির্দেশক হিসেবে কাজ করতে পারে। বর্তমান প্রজন্মকে অবশ্যই এই শিক্ষা গ্রহণ করতে হবে যে প্রবীণদের সান্নিধ্যে বসে তাঁদের জীবনের গল্প, তাঁদের সংগ্রামের ইতিহাস এবং তাঁদের প্রজ্ঞা শোনা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই ধরনের অভিজ্ঞতা মানুষকে আরও সচেতন, দায়িত্বশীল এবং পরিপক্ক হিসেবে গড়ে তোলে।
আজকের তরুণদের উচিত প্রবীণদের সঙ্গে আরও বেশি সময় কাটানো, তাঁদের কথা মনোযোগ দিয়ে শোনা এবং তাঁদের জীবন থেকে মূল্যবান শিক্ষা গ্রহণ করা। শুধু তাত্ত্বিক জ্ঞান নয়, বাস্তব জীবনের অভিজ্ঞতাও সমানভাবে গুরুত্বপূর্ণ। যদি আজকের প্রজন্ম এভাবে শিক্ষার মূল্য বোঝে, তবে তারা জীবনে সত্যিকারের সাফল্য অর্জন করতে পারবে এবং একটি উন্নত সমাজ গড়ে তুলতে সক্ষম হবে।


