ইবি প্রতিনিধি:
“ভবিষ্যতের বিশ্বের জন্য ডিজিটাল প্রযুক্তি” শীর্ষক প্রতিপাদ্য নিয়ে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) দুই দিনব্যাপী আন্তর্জাতিক গবেষণা সম্মেলন ‘কম্পাস-২০২৫’ সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছে। বিশ্বের ২৬টি দেশের ৫১৮ জন গবেষক এতে অংশ নেন এবং ২৯৪টি গবেষণা প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন।
বৃহস্পতিবার বেলা ১২টার দিকে বীরশ্রেষ্ঠ হামিদুর রহমান মিলনায়তনে উদ্বোধনের মাধ্যমে সম্মেলনের কার্যক্রম শুরু হয় এবং শুক্রবার (২৪ অক্টোবর) সন্ধ্যায় কুষ্টিয়ার দিশা টিএআরসিতে সমাপনী অনুষ্ঠানের মাধ্যমে এর পরিসমাপ্তি ঘটে।
সম্মেলনটির আয়োজনে হোস্ট হিসেবে ছিল ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় সেন্ট্রাল ল্যাব। টেকনিক্যাল সাপোর্ট দেয় আইইইই ইসলামিক ইউনিভার্সিটি স্টুডেন্ট ব্রাঞ্চ, আইইইই কম্পিউটার সোসাইটি বাংলাদেশ চ্যাপ্টার, আইইইই ইএমবি, এবং এসআইসিটি।
প্রথম দিনের উদ্বোধনী সেশনে সভাপতিত্ব করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্ট্রাল ল্যাবরেটরির পরিচালক অধ্যাপক ড. জাহিদুল ইসলাম। অনলাইনে প্রধান পৃষ্ঠপোষক হিসেবে যুক্ত ছিলেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. নকীব মোহাম্মদ নসরুল্লাহ। পৃষ্ঠপোষক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. জাহাঙ্গীর আলম, ছাত্র উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. ওবায়দুল ইসলাম। বিশেষ অতিথি হিসেবে ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিএসই বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. আব্দুর রাজ্জাক, আইইইই সিএস বিডিসি’র প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি অধ্যাপক ড. এম শামীম কায়সার, এবং প্রকৌশল ও প্রযুক্তি অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মনজুরুল হক।
আয়োজনে জেনারেল চেয়ার ছিলেন অধ্যাপক ড. কে. এম. আজহারুল হাসান ও অধ্যাপক ড. আহসান হাবীব তারেক। টিপিসি চেয়ার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন অধ্যাপক ড. ওবাইদুর রহমান ও অধ্যাপক ড. এম. মহসিনুল হক। প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পাকিস্তানের ইন্সটিটিউট অব বিজনেস ম্যানেজমেন্টের রেক্টর তারিক রহিম সম্রো এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিএসই বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. আব্দুর রাজ্জাক।
সমাপনী অনুষ্ঠানে আইসিটি বিভাগের শিক্ষার্থী মারুফা ইয়াসমিন মিশুর সঞ্চালনায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন কনফারেন্স জেনারেল চেয়ার আহসান হাবীব তারেক। প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব বিজনেস অ্যান্ড টেকনোলজির উপাচার্য অধ্যাপক ড. এবিএম শওকত আলী। বিশেষ অতিথি ছিলেন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. মনজুরুল হক।
অর্গানাইজিং চেয়ার অধ্যাপক ড. জাহিদুল ইসলাম বলেন, “কম্পাস–২০২৫ ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসে একটি মাইলফলক। প্রথমবারের মতো আমরা এ স্তরের একটি পূর্ণাঙ্গ আন্তর্জাতিক সম্মেলন আয়োজন করেছি। এটি জ্ঞান বিনিময়, গবেষণায় সহযোগিতা ও উদ্ভাবনের নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে।”
অধ্যাপক ড. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, “বর্তমান সময়ে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে দ্রুত পরিবর্তন ঘটছে। গবেষণা ছাড়া কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ও অটোমেশনের যুগে টিকে থাকা সম্ভব নয়। এই ধরনের সম্মেলন তরুণ গবেষকদের দক্ষতা বৃদ্ধি ও নতুন জ্ঞানের পথ খুলে দেয়।”
উপাচার্য অধ্যাপক ড. নকীব মোহাম্মদ নসরুল্লাহ বলেন, “ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসে এটি একটি গর্বের অধ্যায়। এই আন্তর্জাতিক সম্মেলন আমাদের একাডেমিক ও গবেষণা উৎকর্ষের পথে একটি ঐতিহাসিক সংযোজন।”
সম্মেলনে উপস্থাপিত ৭৯০টি প্রবন্ধের মধ্যে ২৯৪টি গৃহীত হয়, যার মধ্যে ২৪০টি প্রবন্ধ অনলাইন ও অফলাইন—এই দুই ধাপে ছয়টি প্যারালাল সেশনে উপস্থাপন করা হয়। গৃহীত প্রবন্ধগুলো স্কোপাস ইনডেক্সড জার্নালে প্রকাশিত হবে। আলোচনায় উঠে আসে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, মেশিন লার্নিং, কোয়ান্টাম কম্পিউটিং, ডেটা অ্যানালিটিক্স, নেটওয়ার্ক সিকিউরিটি, কম্পিউটার ভিশনসহ তথ্যপ্রযুক্তির নানা বিষয়।
নিউজের জন্য: news.sangbadlive24@gmail.com