ঢাকাবুধবার , ১৬ জুলাই ২০২৫
  1. কৃষি ও পরিবেশ
  2. খেলা
  3. জাতীয়
  4. ধর্ম
  5. বিনোদন
  6. বিশ্ব
  7. ভ্রমণ
  8. মতামত
  9. রাজনীতি
  10. শিক্ষাঙ্গন
  11. সাক্ষাৎকার
  12. সারাদেশ
  13. সাহিত্য
আজকের সর্বশেষ খবর

‘সাদ হত্যাকাণ্ডের বিচারের জন্য শোকজ যাচ্ছে, আপনারা নিশ্চিত থাকুন দোষীদের শাস্তি হবে।’- বাকৃবি উপাচার্য

বাকৃবি প্রতিনিধি
জুলাই ১৬, ২০২৫ ৬:২৪ অপরাহ্ণ
Link Copied!

বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (বাকৃবি) উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ কে ফজলুল হক ভূঁইয়া বলেছেন, ‘সাদ হত্যাকাণ্ডের বিচারের জন্য শোকজ যাচ্ছে, আপনারা নিশ্চিত থাকুন দোষীদের শাস্তি হবে। বাকৃবিতে সংঘটিত সকল অন্যায়ের বিচার হবে । বিশেষ করে আমি যতদিন দায়িত্বে আছি, বিচার করেই যাবো। বাকৃবিতে গঠিত গণতদন্ত কমিশনের সুপারিশ সিন্ডিকেটে উত্থাপিত হয়েছিল। সিন্ডিকেটে সুপারিশ সম্পূর্ণভাবে সমর্থিত হয়েছে। এর অ্যাকশন আপনারা ৫ আগস্টের আগে দেখতে পাবেন, এমনকি দুই-তিনদিনের মধ্যেও দেখতে পেতে পারেন। ৫ আগস্টের আগে শীঘ্রই তা দৃশ্যমান হবে।”

বুধবার (১৬ জুলাই) সকাল সাড়ে ১০টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদীন মিলনায়তনে ‘জুলাই আন্দোলনের সংক্ষিপ্ত ভিডিও ক্লিপ প্রদর্শনী, মুক্তলোচনা ও শহীদ পরিবারের সদস্যদের সম্মাননা’ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য প্রদানকালে তিনি এসব কথা বলেন।

এসময় তিনি আরও বলেন, ‘এটা আমাদের একটি শোকের দিন। আমরা আপনাদের ভুলিনি, সারাজীবন এই দেশ আপনাদের স্মরণ করবে। বাকৃবিতে আন্দোলন হয়নি এটা পরিপূর্ণ ভাবে সত্য নয়। এখানকার শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারীরা ঘুমিয়ে থাকেনি। আমরা রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে আন্দোলন করেছি। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের স্টাইপেন্ড বাড়ানোর জন্য আমরা আবেদন করব। শিক্ষার্থীদের হেলথ ইনস্যুরেন্সের জন্য আমরা ব্যবস্থা নিবো।’

যথাযোগ্য মর্যাদা ও ভাবগাম্ভীর্যের সাথে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (বাকৃবি) ‘জুলাই শহীদ দিবস’ পালিত হয়েছে। জাতীয় দিবস উদযাপন কমিটির আয়োজনে ওই দিবস পালিত হয়েছে। দিবসটি উপলক্ষে বুধবার সকাল ১০টায় উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ কে ফজলুল হক ভূঁইয়ার নেতৃত্বে একটি শোক র‌্যালি বের করা হয়। র‌্যালিটি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন ভবন থেকে শুরু হয়ে বিশ্ববিদ্যালিয়ের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদীন মিলনায়তনে এসে শেষ হয়। এসময়ে র‌্যালিতে অংশগ্রহণকারীরা কালো ব্যাজ ধারণ করেন।

র‌্যালি শেষে শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদীন মিলনায়তনে জুলাই আন্দোলনের সংক্ষিপ্ত ভিডিও ক্লিপ প্রদর্শনী, মুক্তলোচনা ও শহীদ পরিবারের সদস্যদের সম্মাননা অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানের শুরুতে জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে নিহত ও আহতদের স্মরণে বিশেষ দোয়া অনুষ্ঠিত হয়। পরে জনসংযোগ ও প্রকাশনা দফতরের পরিচালনায় জুলাই আন্দোলনের উপর তিনটি ভিডিও ক্লিপ প্রদর্শিত হয়। এরপর গণঅভ্যুত্থানে ময়মনসিংহ অঞ্চলের শহীদ রেদোয়ান হোসেন সাগরের পিতা মো. আসাদুজ্জামান আসাদ, শহীদ মাওলানা সাদেকুর রহমানের ভাই মো. সাদ্দাম হোসেন এবং শহীদ আছির এম.টি শারাল হকের পিতা এইচ.এম. এনামুল হকের হাতে সম্মাননা স্মারক তুলে দেয়া হয়।

পরে মুক্ত আলোচনায় স্মৃতিচারণ করেন জুলাই -আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে অংশগ্রহণকারী বাকৃবির ক্রিয়াশীল বিভিন্ন ছাত্র সংগঠনের নেতৃবৃন্দ। এছাড়া বাকৃবির ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার, বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষকবৃন্দ তাদের জুলাই আন্দোলনের স্মৃতি এবং আকাঙ্ক্ষা তুলে ধরেন।

অনুষ্ঠানে ছাত্র বিষয়ক উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মো. শহীদুল হকের সভাপতিত্বে এবং সহযোগী ছাত্র বিষয়ক উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ সাইফুল্লাহর সঞ্চালনায় প্রধান পৃষ্ঠপোষক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাকৃবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ কে ফজলুল হক ভূঁইয়া। আরও উপস্থিত ছিলেন শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মো: রফিকুল ইসলাম সরদার এবং ময়মনসিংহ অঞ্চলের শহীদ পরিবারের সদস্যবৃন্দ। এছাড়াও বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারী , ক্রিয়াশীল সংগঠনের নেতৃবৃন্দ এবং সাধারণ শিক্ষার্থীরা এসময় উপস্থিত ছিলেন।

এসময় শহীদ আছির এম.টি শারাল হকের পিতা এইচ.এম. এনামুল হক বলেন, ‘আমার সন্তান শাহাদাত বরণ করেছে, তার সাথী ও সহযোদ্ধারা বিজয় ছিনিয়ে এনেছে, তারা গাজী হয়েছে। শহীদদের রক্তের দাগ শুকিয়ে গেছে কিন্তু তাদের চেতনা, দেশপ্রেম শেষ হয়ে যায়নি। যেই বৈষম্য দূর করার জন্য আমার ছেলেরা প্রাণ দিলো, তার জন্য দুর্নীতিমুক্ত সমাজ গঠন প্রয়োজন। বৈষম্যমূলক দেশ গঠন করতে ব্যক্তিগত স্বার্থ, দলীয় স্বার্থের উর্ধ্বে দেশের স্বার্থকে প্রাধান্য দিতে হবে। এই আন্দোলন যাতে ব্যর্থ না হয় সেই বিষয়ে সকলকে সম্মিলিত ভাবে কাজ করতে হবে। বিপ্লবের ইতিহাস শেষ হওয়ার নয়, আমরা জাতির কাছে প্রত্যাশা করবো এই সরকার থাকা কালেই সকল হত্যার ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠিত হোক। যারা আহত হাসপাতালে কাতরাচ্ছে তাদের চিকিৎসা করা হোক। বিচারকার্য দীর্ঘায়িত হলে তার ন্যায় বিচার হয় না। তাই দ্রুত খুনিদের বিচার নিশ্চিত করুন।’

শহীদ মাওলানা সাদেকুর রহমানের ভাই মো. সাদ্দাম হোসেন বলেন, ‘৫ আগস্ট সাভারে এনাম মেডিকেল কলেজের সামনে থেকে শহীদ হয় আমার ভাই। তার সাথে খালাতো ভাই না থাকলে আমরা তার লাশটাও পেতাম না। মৃত্যুর আগে আমার ভাই আমাকে ফোনে বলে যে আমার ছোট ছোট দুইটা বাচ্চা রেখে যাচ্ছি তুমি দেখে রেখো। আজকে যারা আমার নিরপরাধ-নির্দোষ ভাইকে হত্যা করেছে তাদের বিচার চাই। যারা ছোট ছোট ছেলে মেয়েদের এতিম করেছে, অল্পবয়সী মেয়েদের বিধবা করেছে তাদের আগে বিচার চাই। আমার ভাইয়ের কবরের দিকে আমি ঘন্টার পর ঘন্টা তাকিয়ে থাকি আমার আন্তর ফেটে যায়। আমার এলাকায় চারজন শহীদ, আমার দুইজন ছাত্র শহীদ। সরকারকে বলতে চাই আগে দ্রুত বিচার করুন। তারা যে উদ্দেশ্যে শহীদ হয়েছে সেই পথে দেশ।পরিচালনা করুন।’

শহীদ রেদোয়ান হোসেন সাগরের পিতা মো. আসাদুজ্জামান আসাদ বলেন, ‘আমরা সরকারের কাছে জুলাই সনদ ও জুলাই ঘোষণা পত্র চাই। এগুলো যদি না দেওয়া হয় আমাদের আহতরা এবং আমরা যারা শহীদ পরিবার তারা ভবিষ্যতে রাষ্ট্রদ্রোহীতার মধ্যে পড়বো। এই সরকার ছাড়া অন্য সরকার ক্ষমতায় গেলে আমরা ঘোষণা পত্র পাবো না। নিরপেক্ষ সরকারের কাছে আমাদের দাবি থাকবে জুলাই সনদ দ্রুত দেওয়া হোক।’

 

www.sangbadlive24.com এ প্রকাশিত সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও সবকিছুই আমাদের নিজস্ব। বিনা অনুমতিতে এই নিউজ পোর্টালের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা সম্পূর্ণ বেআইনি। যে কোন বিষয়ে নিউজ/ফিচার/ছবি/ভিডিও পাঠান news.sangbadlive24@gmail.com এই ইমেইলে।