ড. খান মো. সাইফুল ইসলাম: প্রাণিজ আমিষের চাহিদা পূরণে মুরগীর মাংস ব্যাপক ভূমিকা পালন করে আসছে। বাণিজ্যিকভাবে ফার্ম গড়ে উঠায় সস্তায় এ আমিষ পাওয়া যায়। ফার্মে মাংসের জন্য ব্রয়লার ও ডিমের জন্য লেয়ারসহ বিভিন্ন মুরগী লালন পালন করা হয়।
ফার্মে ব্রয়লার মুরগি বৃদ্ধির হার খুব দ্রুত, উচ্চ ফিড রূপান্তর অনুপাত (Food Conversion Ratio=FCR) কম , যা খাদ্যকে শক্তি তথা মাংসে রূপান্তর হয়। আধুনিক বাণিজ্যিক ব্রয়লারগুলো ৩৫ থেকে ৪৫ দিনের মধ্যে প্রায় ২ কেজি ওজন-ওজন পৌঁছাতে সক্ষম। আর এ কারণে এদের মাংস কিছুটা নরম হয়ে থাকে।
তবে বর্তমান সময়ে ফার্মে উৎপাদিত মুরগী ও চড়ে খাওয়া দেশী মুরগীর মধ্যে কোনটি বেশি নিরাপদ/স্বাস্থ্যসম্মত? এ প্রশ্নটি অনেকেরই। বৈজ্ঞানিকভাবে প্রমাণিত ফার্মে উৎপাদিত মুরগীই অনেক বেশি নিরাপদ। কারণ ফার্মে উৎপাদিত মুরগীর ক্ষেত্রে ইনকিউবেটরে ডিম থেকে বাচ্চা ফোটা থেকে শুরু করে খাবার টেবিলে পরিবেশন পর্যন্ত প্রতিটি পর্যায় মানুষের নিয়ন্ত্রণে থাকে। এছাড়াও ফার্মের মুরগীর খাবার স্বাস্থ্যসম্মত ও রোগ-বালাইও নিয়ন্ত্রণ করা হয়ে থাকে। কিন্তু চড়ে খাওয়া মুরগীর ক্ষেত্রে এগুলোর কিছুই নিয়ন্ত্রিত হয় না। এসব নানাবিধ কারণে ফার্মে উৎপাদিত মুরগী চড়ে খাওয়া মুরগীর থেকে বেশি নিরাপদ ও স্বাস্থ্যসম্মত বলে প্রমাণিত হয়েছে।
আমাদের নতুন প্রজন্মের কাছেও ফার্মে উৎপাদিত ব্রয়লারের মাংস খুবই জনপ্রিয়তা পেয়েছে। তবে অপেক্ষাকৃত বয়স্ক তাদের কাছে সেই পুরানো স্বাদের চড়ে খাওয়া হাড্ডিসার দেশী মুরগীগুলো আজও প্রিয়। এটার কারণআসলে জেনারেশনের প্রার্থক্য। কারণ তারা দেশী মুরগী খেতেই অভ্যস্ত। উল্টোদিকে এ নতুন প্রজন্ম ফার্মের উৎপাদিত মুরগী খেতেই বেশি অভ্যস্ত, এ কারণে ফার্মের মুরগীই তাদের কাছে প্রিয়। তবে এটিই সত্য, দামে, মানে, গুণে, আমিষের চাহিদা পূরণে উপুর্যপুরি জনস্বাস্থ্যের জন্য ফার্মের মুরগীই সেরা এটিতে কোন সন্দেহ নেই।
লেখক: প্রফেসর, পশুপুষ্টি বিভাগ, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়


