ফাতেমা আলী, জবি প্রতিনিধি: দেশের ২২টি সাধারণ, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষে প্রথম বর্ষের মানবিক বিভাগের ‘বি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এবারের ভর্তি পরীক্ষায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রে পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ১২ হাজার ৮৪৫ জন। এর মধ্যে শারীরিক ভাবে অসুস্থ শিক্ষার্থীর সংখ্যা তিন জন। তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টারে বিশেষ ব্যবস্থায় পরীক্ষা দিয়েছেন।
এরা হলেন দৃষ্টি প্রতিবন্ধী ফৌজিয়া আক্তার প্রাপ্তি, দুর্ঘটনায় আহত মাইশা আক্তার দোলা, শারীরিক প্রতিবন্ধী মাসুম শাহরিয়ার।
ফৌজিয়া আক্তার প্রাপ্তি দৃষ্টি প্রতিবন্ধী হয়েও শ্রুতি লেখক মো. সাব্বির ইসলাম এর সাহায্যে পরীক্ষা দিয়েছেন। তিনি ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে মায়ের সাথে এসেছেন এবং তিনি ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি কলেজে পড়ালেখা করেছেন।
তিনি বলেন, সরকার যদি উন্নত দেশের মতো ব্রেইল অথবা কম্পিউটার এর সাহায্যে পরীক্ষা নিত তাহলে আরো অনেক ভালো হতো। কেননা অন্যের সাহায্যে পরীক্ষা নিলে সর্বক্ষণই অনিশ্চয়তা কাজ করে। তার স্বপ্ন তিনি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ইংরেজি বিভাগে পড়ালেখা করতে চান।
ফার্মগেট থেকে আসা মাইশা আক্তার দোলা জানান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পরীক্ষা দিতে যাওয়ার সময় দুর্ঘটনায় পায়ে ফ্র্যাকচার হয়েছে। আমাকে মেডিকেল সেন্টারে পরীক্ষা নেয়া হয়েছে। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগে পড়াশোনার ইচ্ছা রয়েছে।
মাসুম শাহরিয়ারও শারীরিক প্রতিবন্ধী, তার দুই হাত নেই। তবুও এই প্রতিবন্ধকতা আটকাতে পারেনি তাকে। স্কুল-কলেজের গণ্ডি পেরিয়ে স্বপ্ন দেখছেন বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার। তাই তিনিও শ্রুতি লেখকের সাহায্যে পরীক্ষা দিয়েছেন।
মাসুম শাহরিয়ার বলেন, প্রতিবন্ধকতা থাকলেও বন্ধুবান্ধব ও শিক্ষকদের সহযোগিতায় আমি এপর্যন্ত আসতে পেরেছি। পরীক্ষা ভালো হয়েছে, আশাকরি ভালো একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি সুযোগ পাবো। পড়াশোনা শেষ করে প্রতিষ্ঠিত হয়ে দেশের কল্যাণে কাজ করতে চাই।
এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ প্রধান চিকিৎসা কর্মকর্তা ডা. মিতা শবনম বলেন, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিক্যাল সেন্টারে বিশেষভাবে সক্ষম তিন শিক্ষার্থী পরীক্ষা দিয়েছেন। শারীরিক প্রতিবন্ধকতা থাকায় তাদের আবেদনে বিশেষ ব্যবস্থায় পরীক্ষা নেয়া হয়। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রে গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নিতে ৪ জন শিক্ষার্থী শারীরিক প্রতিবন্ধকতার কারণে বিশেষ অনুমতি চেয়ে আবেদন জানায়। তবে পরীক্ষা দিন উপস্থিত ছিলেন ৩ জন।
এবিষয়ে জানতে চাইলে ‘বি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষার সমন্বয়কারী ও বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো. রইছ উদ্দীন বলেন, ‘পরীক্ষার্থীদের আবেদনে আমরা সাড়া দিয়েছি। দৃষ্টি প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীর জন্য শ্রুতি লেখক দিয়েছি। তার পছন্দমতো আমরা কাউকে দেইনি। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের মাধ্যমে এসএসসির উপরে নয়, এমন শিক্ষার্থীকে দেয়া হয়েছে। তাকে সম্পূর্ণ আলাদা রুমে দেয়া হয়েছে।’
গুচ্ছভুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়সমূহের সমন্বিত ভর্তি কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক ও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. ইমদাদুল হক বলেন, ‘আমরা সবাইকে সমানভাবে সুযোগ দিতে চাই। যেহেতু তারা জাতীয় পরীক্ষার মাধ্যমে পাশ করে এসেছে, তারা যোগ্য প্রার্থী। তারা প্রতিবন্ধী, তাদেরকেও তো আমাদের সুযোগ দিতে হবে। সেজন্য আমাদের পক্ষ থেকে যা যা করার দরকার আমরা করেছি।
www.sangbadlive24.com এ প্রকাশিত সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও সবকিছুই আমাদের নিজস্ব। বিনা অনুমতিতে এই নিউজ পোর্টালের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা সম্পূর্ণ বেআইনি। যে কোন বিষয়ে নিউজ/ফিচার/ছবি/ভিডিও পাঠান news.sangbadlive24@gmail.com এই ইমেইলে।


