দই হল এক ধরনের দুগ্ধজাত খাদ্য যা দুধের ব্যাক্টেরিয়া গাঁজন হতে প্রস্তুত করা হয়। ল্যাক্টোজের গাঁজনের মাধ্যমে ল্যাক্টিক এসিড তৈরি করা হয়, যা দুধের প্রোটিনের ওপর কাজ করে দইয়ের স্বাদ ও এর বৈশিষ্ট্যপূর্ণ গন্ধ প্রদান করে। মানুষ ৪৫০০ বছর ধরে দই প্রস্তুত করছে এবং তা খেয়ে আসছে। সারা পৃথিবীতেই এটি পরিচিত। পুষ্টিকর এবং সুস্বাদু খাদ্য হিসেবে এর সুনাম আছে। দই প্রোটিন, ক্যালসিয়াম, রাইবোফ্ল্যাভিন, ভিটামিন ভিটামিন বি-৬ এবং ভিটামিন বি-১২ এ অত্যন্ত সমৃদ্ধ।
বিজ্ঞানীরা বলেন, দই খেলে মানব দেহে পাকস্থলীর উপকারী ব্যাকটেরিয়ার বা প্রোবায়োটিক্স-এর পরিমাণ বৃদ্ধি পায়, যার ফলে বিষাক্ত রাসায়নিকের ক্ষতিকর প্রভাব থেকে শরীর সুরক্ষিত থাকবে। দই খেলে আমাদের ইমিউনিটি সিস্টেম কে শক্তিশালী বানায়, হজম শক্তি বৃদ্ধি করে, শরীরের ওজন কমায়, হার্টের স্বাস্থ্যের উন্নতি কর। দইতে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম থাকে যা আমাদের হাড় আর দাঁতকে মজবুত করে তোলে। শুধু তাই নয় বিষন্নতাকে দূর করে ও চাপ মুক্ত করে, আলসারের সম্ভাবনা কমায় এবং কোলেস্টেরল কমাতে সাহায্য করে।
বাংলাদেশের অন্যান্য জেলা কিংবা অঞ্চলে উৎপাদিত হলেও কিছু বিশেষত্বের কারণে ‘বগুড়ার দই’-এর খ্যাতি দেশজুড়ে। উৎপাদন ব্যবস্থার প্রতিটি পর্যায়ে কারিগরদের বিশেষ পদ্ধতি অনুসরণের পাশাপাশি মান নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে তারা যত্নবান হওয়ায় বগুড়ার দই স্বাদে-গুণে তুলনাহীন। প্রায় দেড়শ’ বছর আগে বগুড়ার শেরপুর উপজেলার ঘোষ পরিবারের হাত ধরে বগুড়ায় দইয়ের উৎপাদন শুরু। বগুড়ার দই ব্রিটেনের রানী ভিক্টোরিয়া, রানী এলিজাবেথ থেকে শুরু করে মার্কিন মুল্লুকে পৌছে যাওয়া বগুড়ার জন্য গর্বের বিষয়।


