কৃষিবিদ নিহাল হোসেন: এবার ঈদে সারাদেশে প্রায় ৯৫ লক্ষ গরু, ছাগল, ভেড়া ও মহিষ কোরবানী হয়েছে যার বাজার মূল্য ৬০ হাজার কোটি টাকার উপরে।কোরবানীর ঈদ চামড়া শিল্পের প্রধানতম উৎস। সরকার চামড়ার দাম বেঁধে দিলেও মৌসুমী ব্যবসায়ী সে দাম না পাওয়ার অন্যতম কারণ ধরা যায় বৃষ্টি ও লবনের দাম বৃদ্ধি পাওয়া। এতে বিপাকে পড়ে মৌসুমী চামড়া ব্যবসায়ীরা। প্রতি বছরই এমন হয় অথচ চামড়ার ব্যাপক রপ্তানির সুযোগ রয়েছে। মৌসুমী ব্যবসায়ীদের লোকসান কমাতে কিছু পদক্ষেপ নেওয়া যেতে পারে।
প্রথমত চামড়ার সঠিক দাম হিসাব করা:
মৌসুমী ব্যবসায়ীরা প্রায়ই লবণ এবং মজুরির টাকা হিসেব না করে চামড়ার দাম করেন। যা পরবর্তীতে কিছুটা লোকসান বহন করায়।তাই কাচা চামড়া ক্রয় না করে লবণ দেওয়া চামড়া ক্রয়ের চল প্রচলন করা যেতে পারে।
দ্বিতীয়ত সঠিকভাবে সংরক্ষণ নিশ্চিত করা:
ঠিকভাবে সংরক্ষণ না করায় প্রতিবছর অন্তত ১৫ থেকে ২০ শতাংশ কোরবানির পশুর চামড়া নষ্ট হয় তাই চামড়া ক্রয়ের ৪ থেকে ৯ ঘন্টার মধ্যে তা সংরক্ষণ নিশ্চিত করা জরুরি। সাধারণত চামড়ার হিসাব বর্ণফুটে করা হয়। ৩০ থেকে ৫০ কম্পিটের চামড়াকে বড় আকারের ধরা হয়। এই আকারের একটি জন্য ৮ থেকে ৯ কেজি ল হনা। আর চামড়ার আকার ৫০ থেকে ৬০ বর্গফুট হলে লাগে ১০ কেজির মতো। অন্যদিকে, মাঝারি (২২-২৫ বর্গফুট) আকারের একটি চামড়ার জন্য ৫ থেকে ৬ কেজি লবণ প্রয়োজন হয়। আর ছোট (১৫-১৬ বর্গফুট) আকারের চামড়ার জন্য লাগে থেকে ৪ কেজি। ,
তৃতীয়ত অধিক লাভের আশায় স্টক বা মজুদ না করা:
দেখা গেছে অনেকেই চামড়া বেশি দামে বিক্রি আশায় দীর্ঘ সময় রেখে দেন। এক বাজার থেকে অন্য বাজারে ঘোরেন। এতে চামড়ার স্থায়িত্ব নষ্ট হয়।
বিভাগীয় পর্যায়ে সংরক্ষণ এর ব্যবস্থা করা:
দেখা যায় সারা দেশ থেকে রাজধানীতে চামড়া পৌছাতে ১০-১৫ দিন লেগে যায়। এ সময় চামড়া বিক্ষিপ্তভাবে সংরক্ষণ করা হয়। বিভাগীয় শহরে আধুনিক কসাইখানা ও হিমাগার স্থাপন করা গেলে ভালো মানের চামড়া সংগ্রহের পরিমাণ অনেক বৃদ্ধি পাবে।
সরকারি পদক্ষেপ গ্রহণ:
সরকারের মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় এবং বানিজ্য মন্ত্রণালয়ের যৌথভাবে কাজ করা দরকার।চামড়া ব্যবসার সাথে জড়িত অন্যান্য ব্যবসা সিন্ডিকেট মুক্ত করণ ও চামড়া আমদানি করে এমন দেশসমূহের সাথে নিগোসিয়েশন করে প্রক্রিয়াতকৃত চামড়া রপ্তানি বৃদ্ধির কার্যকর উদ্যোগ নেয়া জরুরি।
লেখক: প্রানিসম্পদ কর্মকর্তা, দাবী মৌলিক উন্নয়ন সংস্থা।


