বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া একঝাঁক তরুণ দেশকে পাল্টে দিতে চান। আর পাল্টে দেয়ার প্রত্যয়কে সামনে রেখে এগিয়ে চলা এসব তরুণদের সংগঠন ‘চলো পাল্টাই ফাউন্ডেশন’। প্রতিবারের মত করে এবারও বিপুলসংখ্যক অসহায় শীতার্ত মানুষের পাশে দাঁড়ালো মানবিক এই সংগঠন।
নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (নোবিপ্রবি) ক্যাম্পাসে সোমবার(৯ জানুয়ারি) শীতবস্ত্র বিতরণ কার্যক্রমের উদ্বোধনী দিনে প্রথম ধাপে সংগঠনটি ৫০টি অসহায় পরিবারের মাঝে কম্বল বিতরণ করে। এছাড়াও ওইদিন বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশ্ববর্তী এলাকার নুর জাহান মেমোরিয়াল স্কুলের ৩০ জন অসচ্ছল শিশুদের মাঝে বিতরণ করে সোয়েটার। শীতবস্ত্র বিতরণ কার্যক্রমের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. দিদার-উল-আলম। তিনি বলেছিলেন, পাল্টে দেবার প্রত্যয় নিয়ে চলো পাল্টাই ফাউন্ডেশন যেসব কাজ করছে তা অনেক প্রশংসনীয়।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. আবদুল বাকী। অন্যান্যের মধ্যে আরো উপস্থিত ছিলেন শিক্ষক সমিতির সভাপতি ও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. নেওয়াজ মোহাম্মদ বাহাদুর এবং চলো পাল্টাই ফাউন্ডেশনের উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. ফিরোজ আহমেদ।
প্রথম ধাপের বিতরণ শেষে ওইদিন সোমবার বিকেলে দ্বিতীয় ধাপে কম্বল বিতরণের জন্য মানবিক এই সংগঠনের স্বেচ্ছাসেবী দল ছুটে যান লক্ষ্মীপুরের আলেকজাণ্ডার এবং মুন্সীরহাটের প্রত্যন্ত অঞ্চলে। সেখানে গিয়ে অসহায় শীতার্ত ২২০ পরিবারের মাঝে কম্বল বিতরণ করেন তারা। এবার তৃতীয় ধাপে বিতরণের পালা। দিনটি ১০ জানুয়ারি, মঙ্গলবার। সন্ধ্যায় ঢাকাগামী নোয়াখালী এক্সপ্রেস লোকাল ট্রেনে ওঠেন চলো পাল্টাই ফাউন্ডেশনের বেশ কয়েকজন স্বেচ্ছাসেবী। রাতভর না ঘুমিয়ে নোয়াখালীর সোনাপুর রেলওয়ে স্টেশন থেকে শুরু করে রাজধানী ঢাকার বিমানবন্দর রেলওয়ে স্টেশন পর্যন্ত বিভিন্ন স্টেশনে নেমে নেমে রেলওয়ে এলাকায় ভাসমান জীবনযাপন করা অসহায় মানুষের মাঝে ৩২০ টি কম্বল বিতরণ করেন তারা।
চতুর্থ এবং শেষ ধাপে বুধবার(১১ জানুয়ারি) সংগঠনটির স্বেচ্ছাসেবী দল নোয়াখালীর কয়েকটি এলাকায় অসহায় ৩০ টি পরিবার খোঁজে বের করে তাদের মাঝে পৌঁছে দেন ৩০টি কম্বল। এভাবেই শেষ হয় চলো পাল্টাই ফাউন্ডেশনের এবারের তিনদিনব্যাপী শীতবস্ত্র বিতরণ কর্মসূচি।
কম্বল পেয়ে খুশি শীতার্তরা:
চলো পাল্টাই ফাউন্ডেশনের কম্বল পেয়ে খুশি শীতার্তরা। কম্বল পেয়ে অনুভূতি প্রকাশ করতে গিয়ে শামসুন্নাহার নামের এক শীতার্ত নারী বলেন, ‘যারা এই উদ্যোগ নিয়েছেন আমরা তাদের জন্য নামাজ পড়ে দোয়া করি। আল্লাহ ভালো করুক তাদের। এই শীতে কম্বল পেয়ে আমাদের অনেক উপকার হয়েছে।’
আরেক শীতার্ত বলেন, ‘গত কয়েকদিন ধরে হাড়কাঁপানো শীতের মধ্যে কষ্ট করতে হয়েছে আমাদের। চলো পাল্টাইয়ের কম্বল পেয়ে আমরা খুশি।’
চলো পাল্টাই ফাউন্ডেশনের সভাপতি যা বললেন:
স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন চলো পাল্টাই ফাউন্ডেশনের মানবিক এই কার্যক্রম প্রতিবছর অব্যাহত থাকবে বলে জানান ফাউন্ডেশনের বর্তমান সভাপতি শেখ আশিকুর রহমান। তিনি বলেন, এবার আমাদের দেশে অনেক বেশি শীত নেমেছে। সেই সাথে বেড়েছে গরিব-দুঃখী মানুষের দুর্ভোগ। আমরা চেষ্টা করেছি শীতার্তদের পাশে দাঁড়ানোর। চলো পাল্টাই ফাউন্ডেশন সর্বদা মানুষের সেবায় নিঃস্বার্থভাবে কাজ করে যাবে।
তিনি আরো বলেন, মানবিক আবেদনে সাড়া দিয়ে শীতার্তদের সহায়তায় সরকারের পাশাপাশি সমাজের বিত্তবানসহ সকলের এগিয়ে আসতে হবে। সবাই যদি নিজের জায়গা থেকে এগিয়ে আসেন, তবেই শীতার্ত মানুষের দুর্ভোগ কিছুটা হলেও লাঘব করা সম্ভব হবে।


