ঢাকাশুক্রবার , ৬ জুন ২০২৫
  1. কৃষি ও পরিবেশ
  2. খেলা
  3. জাতীয়
  4. ধর্ম
  5. বিনোদন
  6. বিশ্ব
  7. ভ্রমণ
  8. মতামত
  9. রাজনীতি
  10. শিক্ষাঙ্গন
  11. সাক্ষাৎকার
  12. সারাদেশ
  13. সাহিত্য
আজকের সর্বশেষ খবর

কৃষিকে ভালোবেসেই কৃষিবিদ জাহিদের উদ্যোক্তা যাত্রা

মেহেদী সৌরভ
জুন ৬, ২০২৫ ১১:১৯ পূর্বাহ্ণ
Link Copied!

কৃষি একসময় কেবলই বেঁচে থাকার অবলম্বন ছিল, এখন তা হয়ে উঠেছে সম্ভাবনার নতুন দিগন্ত। আজকের তরুণদের অনেকেই চাকরির পেছনে না ছুটে কৃষিকে পেশা হিসেবে নিচ্ছেন, কৃষিকে দেখছেন সম্মানের জায়গা থেকে। তেমনি একজন তরুণ কৃষি উদ্যোক্তা রাজশাহীর কৃষিবিদ জাহিদ হাসান। বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অনার্স ও মাস্টার্স শেষ করে তিনি এখন পুরোপুরি কৃষি ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত। তার এই যাত্রা শুধুমাত্র নিজের নয়, বরং গ্রামের আরও অনেক মানুষের জন্য অনুপ্রেরণা।

শুরুর গল্প: শিক্ষা আর বাস্তব জীবনের মেলবন্ধন

জাহিদ হাসান বলেন, “আমি রাজশাহীর ছেলে। আমাদের পরিবার আগে থেকেই কৃষির সঙ্গে যুক্ত। ছোটবেলা থেকেই দেখেছি, বাবা-মা কৃষিতে কেমন পরিশ্রম করতেন। কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে গিয়ে বুঝতে পারি—এই খাতের সম্ভাবনা কত বিশাল। তখনই সিদ্ধান্ত নেই, আমি নিজেই কিছু করব।”

জাহিদ যখন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ছিলেন, তখনই কৃষি নিয়ে হাতে-কলমে কাজ শুরু করেন। জীবনের মোড় ঘোরে যখন হঠাৎ করেই বাবাকে হারান। পরিবারের দায়িত্ব এসে পড়ে তার কাঁধে। সেখান থেকেই শুরু হয় উদ্যোক্তা হিসেবে তার পথচলা।

সমাজের চোখে অন্যরকম হলেও পরিবার ছিল পাশে

উদ্যোক্তা হওয়ার শুরুতে অনেক চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হয়েছে জাহিদকে। “পরিবার সবসময় সাপোর্ট দিয়েছে, তবে সমাজের মানুষ সহজভাবে নেয়নি। অনেকে বলত, এত লেখাপড়া করে কৃষি করবে? চাকরি করলেই তো ভালো হতো। কিন্তু আমি জানতাম আমি কী করছি।”

আম চাষ কেন বেছে নিলেন?

জাহিদ জানান, “কৃষির সব খাতেই কাজ করার ইচ্ছা আছে। তবে রাজশাহীর ছেলে হওয়ায় এবং নিজেদের আম বাগান থাকার সুবাদে আম চাষে যুক্ত হওয়াটা সহজ ছিল। রাজশাহীর আম আন্তর্জাতিকভাবেও পরিচিত—এই সুযোগটা আমি কাজে লাগাতে চেয়েছি।”

আধুনিক কৃষির পথে যাত্রা

তার উদ্যোগের সবচেয়ে বড় বৈশিষ্ট্য হলো—আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার। “আমি চাষের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত সব পর্যায়ে আধুনিক পদ্ধতি প্রয়োগ করি। জাত বাছাই, সার ব্যবস্থাপনা, সেচ, কীটনাশক প্রয়োগ, ফল সংগ্রহ ও সংরক্ষণ—সব ক্ষেত্রেই প্রযুক্তিকে কাজে লাগাচ্ছি,” জানান জাহিদ।

চ্যালেঞ্জ ও শিখন

উদ্যোক্তা হিসেবে জাহিদকে পাড়ি দিতে হয়েছে কঠিন পথ। “শুরুতে অর্থের অভাব ছিল, হাতে পর্যাপ্ত ইনভেস্ট ছিল না। অনেক কিছু বুঝতাম না। ধীরে ধীরে অভিজ্ঞতা বাড়ে, নানা উৎস থেকে বিনিয়োগও জোগাড় করি। এখনও মাঝেমধ্যে নানা রোগবালাই বা আবহাওয়ার চ্যালেঞ্জ আসে, তবে সেগুলো মোকাবিলা করছি।”

সরকারি সহায়তা কতটা পাচ্ছেন?

“স্থানীয় কৃষি অফিস থেকে আমরা নিয়মিত তথ্য পাই। কিন্তু সরকার বা স্থানীয় প্রশাসন থেকে আর্থিক বা অন্য কোনো সহায়তা পাইনি এখনো,”—বললেন তিনি। উদ্যোক্তাদের জন্য সহজ শর্তে ঋণ বা প্রণোদনার দাবি জানালেন এই তরুণ।

সফলতার গল্প: কর্মসংস্থান সৃষ্টি

জাহিদের সবচেয়ে বড় সফলতা কী? তিনি বলেন, “নিজে শুধু স্বাবলম্বী হইনি, পাশাপাশি ১২-১৫ জনকে মৌসুমভিত্তিক কর্মসংস্থানের সুযোগ করে দিয়েছি। এটাই আমার সবচেয়ে বড় সাফল্য।”

অনুপ্রেরণার উৎস কারা?

“আমার বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনিয়র ভাই-আপু, শ্রদ্ধেয় শিক্ষকগণ আমাকে সবসময় মোটিভেট করেছেন। তাঁদের অনুপ্রেরণাতেই আমি এগিয়ে চলেছি।”

ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা

এই তরুণ উদ্যোক্তা বলেন, “আমার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা হলো—একটি পূর্ণাঙ্গ এগ্রো-ভিত্তিক কোম্পানি গঠন করা। আমাদের উৎপাদিত ফলমূল, বিশেষ করে আম—নিজেদের ব্র্যান্ডে বাজারজাত করতে চাই। কৃষির ভ্যালু চেইনের প্রতিটি ধাপে আমরা কাজ করতে চাই।”

নতুনদের জন্য পরামর্শ

জাহিদ হাসানের মতে, “যারা নতুন উদ্যোক্তা হতে চান, তাদের ধৈর্য রাখতে হবে। প্রতিবন্ধকতা আসবেই, কিন্তু লক্ষ্য ঠিক থাকলে এগিয়ে যাওয়া যায়।”

তরুণদের জন্য কৃষির সম্ভাবনা

জাহিদ বলেন, “কৃষি এখন আর শুধু হালচাষ নয়। আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে এই খাতেই তরুণরা স্বাবলম্বী হতে পারেন। কৃষি খাত তরুণদের জন্য ভবিষ্যতের সবচেয়ে সম্ভাবনাময় ক্ষেত্রগুলোর একটি।”

সংবাদ লাইভ/কৃষি

www.sangbadlive24.com এ প্রকাশিত সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও সবকিছুই আমাদের নিজস্ব। বিনা অনুমতিতে এই নিউজ পোর্টালের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা সম্পূর্ণ বেআইনি। যে কোন বিষয়ে নিউজ/ফিচার/ছবি/ভিডিও পাঠান news.sangbadlive24@gmail.com এই ইমেইলে।