হেমন্তের শেষে শীতের ঠান্ডা পরশে নারায়ণগঞ্জ শহরে খেজুরের রস পাওয়া দুস্প্রাপ্য। দীর্ঘদিন ধরেই ইচ্ছা ছিল কাঁচা খেজুরের রস খাওয়ার কিন্তু খুঁজে পাওয়া গেল না। সর্বশেষ বন্ধুরা একসাথে বসলাম আলোচনা হলো আমাদের একজন বন্ধু ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে আছে, সেখানে নাকি খেজুরের রস পাওয়া যায়।
যেই ভাবা সেই কাজ সবাই ব্যাগপত্র গুছিয়ে প্রস্তুত হয়ে গেলাম ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্যেশ্যে খেজুরের রস খাওয়ার অভিযানে । বুধবার রাতে কমলাপুর থেকে আমরা ট্রেনে যাত্রা শুরু করলাম ঠিক ভোরে পৌঁছে যাই ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে, সেখানে বন্ধু হাছান আমাদের অপেক্ষায় ছিল। সবার মনে একটাই আকাঙ্ক্ষা ছিল, আগে খেজুরের রস খাব, তারপর বিশ্রাম বন্ধু নাঈম ও বায়জিদ ক্লান্ত ছিল তবে খেজুরের রসের লোভে সেই ক্লান্তি দূর হয়ে যায়।
ভোরে শীতের ঠান্ডার পরশে খেজুরের রস খাওয়ার জন্য বন্ধুরা একসাথে যাত্রা শুরু করলাম ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের পার্শ্ববর্তী গ্রাম ত্রিবেণিতে। তার পূর্বে শেখপাড়া বাজারে গরম গরম জিলাপির স্বাদ নেওয়ার মজাটা ভিন্নরকম। গরম জিলাপির স্বাদে একটু শরীর গরম করে আবার চলতে শুরু করলাম দুপাশে ফসলি জমি, মাঝখানে পিচঢালা পথ ধরে তিন চাকার বাহনে, যেটা ওই অঞ্চলে পাখি ভ্যান নামে পরিচিত । হাড় কাঁপানো বাতাস! গল্পগুজব আর হাসি-তামাশায় আমরা উষ্ণতা পাওয়ার চেষ্টা করি।
আমরা একটু শিগ্রই পৌঁছে গিয়েছিলাম গাছির বাড়িতে তখন ভোর ৪ টার এদিক সেদিক হবে। তখন সবে মাত্র গাছি আশেপাশের গ্রাম থেকে খেজুরের রস সংগ্রহে ব্যস্ত ছিল। কিছুক্ষণ অপেক্ষার পরে দাঁত শিরশিরে ঠান্ডা খেজুরের রস খেতে বন্ধুরা সবাই একরকম হুমড়ি খেয়ে পড়ি সেই মুহূর্তেটাকে মনে রাখতে বন্ধু নাঈম ছবিটা তোলেন । সব শেষে আবার ভ্যানে চড়ে ক্যাম্পাসে ফেরার মাধ্যমে শেষ হয় রস অভিযান! তারপর ঘুরে দেখা হয় কুয়াশা স্নাত ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়।


