থার্টি ফার্স্ট নাইটে নতুন বর্ষবরণের নামে ঢাকা সহ সারা দেশে আতশবাজি ও পটকার বিস্ফোরণ এবং ফানুশ উড়ানোর কারণে প্রতি বছর নতুন বছরের আগমন মুহূর্ত মুহুর্মুহু প্রচন্ড শব্দে ভীত-সন্ত্রস্ত হয়ে পড়ে সাধারণ মানুষ।প্রকৃতির নানা স্তরের প্রাণকে প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষভাব হুমকির মুখে ফেলে দেয় এই পটকাবাজির বিকট শব্দ। পাখি সহ ছোট ছোট প্রাণীরা হার্ট এটাক করে মারা যায়। পাখির ডিম নষ্ট হয়। পথের কুকুর- বিড়াল আতঙ্কে ছুটাছুটি করে। অনেক অসুস্থ মানুষ প্রচন্ড যন্ত্রণা ভোগ করেন। উমায়ের ও ইউসুফের মত শিশুদের মৃত্যুর কারণও এই আতশবাজি।
জনজীবনের এ সংকট নিরসনে আজ শুক্রবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে সচেতন নাগরিকবৃন্দের ব্যানারে মানববন্ধন ও গণ অবস্থান কর্মসূচীতে বক্তারা এসব কথা বলেন। সেভ দ্যা ন্যাচার অব বাংলাদেশ এর চেয়ারম্যান আ ন ম মোয়াজ্জেম হোসেনের সভাপতিত্বে ওই মানববন্ধন ও গণ অবস্থান কর্মসূচীতে বিভিন্ন সংগঠনের নেতৃবৃন্দ অংশ নেন।
এসময় বক্তারা বলেন, শব্দ দূষণ আইন , বায়ু দূষণ আইন ও বিস্ফোরক আইন যথাযথ বাস্তবায়নের মাধ্যমে থার্টি ফার্স্ট নাইটে আতশবাজি পটকা ও ফানুশ ব্যবহার নিষিদ্ধ করার উচ্চ আদালতের নির্দেশনা থাকা সত্বেও সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরের চোঁখে পড়ার মত কোন পদক্ষেপ গ্রহন করেনি। তাই ইটের স্তুপে মোড়া ঢাকা সহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বর্ষবরণে আতশবাজির নামে উন্মাদনা রুখতে এখনই আতশবাজি পটকা ও ফানুশ উৎপাদন বিপনন ও আমদানী নিষিদ্ধে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহনের অনুরোধ জানান। একই সাথে স্পর্শকাতর এলাকা সমূহে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও মোবাইল কোর্ট বসানো এবং সারাদেশের আতশবাজির ডিলার পাইকার ও খুচরা ব্যাবসায়ীদের হাতে থাকা সকল আতশবাজি ও পটকা জব্দ করার পাশাপাশি আতশবাজি পটকা ও ফানুশ উৎপাদন বিপনণ এবং বাজারজাত করণ স্থায়ী ভাবে বন্ধ করার দাবী জানান।
বক্তারা আরো বলেন, আকাশ সংস্কৃতির চোয়ায় থার্টি ফার্স্ট নাইট সহ নানা আনন্দ আয়োজনে আতশবাজির মত এই বর্বরতার শিকার হচ্ছেন হাজার হাজার মানুষ, পশুপাখি, পোষা প্রাণীরা। প্রকৃতির নানা স্তরের প্রাণকে প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষভাব হুমকির মুখে ফেলে দেয় এই পটকাবাজির বিকট শব্দ। গতবছর ফানুসের কারণে কয়েকটি বাড়িতে আগুন ধরে যায়। মেট্রোরেলের তারে ঝুলে থাকে জ্বলন্ত ফানুস। তাই এই ক্ষতিকর আনন্দ মাধ্যম বর্জন করতে নাগরিকদের প্রতি আহ্বান জানানো হয় সমাবেশ থেকে। আতশবাজি আমদানি, প্রস্তুতকরণ ইত্যাদি উৎসগুলো নিয়ন্ত্রণে আনতে সরকারকে অনুরোধ করা হয়।
দেশের রাজনৈতিক অস্থিরতার সুযোগ নিয়ে বর্ষবরণ উৎসবকে পূঁজি করে দুর্বৃত্তরা নাশকতার পরিকল্পনা করলেও তাদের প্রতিরোধ করা কঠিন হয়ে যাবে। এই এ ধরনের পটকার নামে বিস্ফোরক ও আতশবাজির বিস্ফোরণ রোখতে কঠোর পদক্ষেপের বিকল্প নেই।
এতে অন্যান্যদের মাঝে বক্তব্য রাখেন নোনা আহমেদ, চেয়ারপার্সন স্টেলা ফাউন্ডেশন, রাকিবুল হক এমিল, চেয়ারপার্সন, পিপল ফর এনিমেল ওয়েলফেয়ার ফাউন্ডেশন, সুমন মজুমদার সমন্বয়ক ওয়াইল্ড ওয়াচ বাংলাদেশ, আজিজুল হাকিম হানি পরিচালক এনিমেল প্লানেট বাংলাদেশ, ইফতেখার সদস্য ডিপ ইকোলজি এন্ড স্নেক রেস্কিউ ফাউন্ডেশন, নয়ন সরকার সেইভ ফিউচার বাংলাদেশ সহ আরও অনেকেই।
সংবাল লাইভ/ঢাকা


